ছিলেন আম্বানির থেকেও ধনী, এখন পথের ভিখারি!

আম্বানি

কিছু সিদ্ধান্ত একজন মানুষকে মধ্যগগনে নিয়ে যেতে পারে, আবার কিছু ভুল সিদ্ধান্ত জীবনকে কার্যত তছনছ করে রেখে দেয়। একজন মানুষকে রাস্তার ভিখারি অবধি করে রেখে দিতে পারে একটা ভুল পদক্ষেপ। ঠিক যেমনটা এই মানুষটার সঙ্গে হয়েছে। যিনি একসময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা নাড়াচাড়া করেছেন, কিন্তু এখন তার এমন করুণ দশা হয়ে গিয়েছে যে তাঁকে দেখলে আপনারও খারাপ লাগতে পারে।

নাম বিজয়পত সিংহানিয়া। যিনি রেমন্ডের মতো সংস্থাকে একটা সময়ে সবকিছুর শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। ১০০ বছরের পুরনো সংস্থা রেমন্ডের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়পত সিংহানিয়া আজ একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। একসময় মুকেশ আম্বানির চেয়ে বেশি সম্পদ তাঁর ছিল। তাঁর বাড়ি মুকেশ আম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলিয়ার চেয়েও বড় ছিল, কিন্তু আজ তিনি একদম সাদামাটা জীবন যাপন করছেন। তাঁর কোনো বাড়ি বা গাড়ি নেই।

বিজয়পত সিংহানিয়া স্বীকার করেছেন যে তাঁর আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তাঁর সংস্থা আজ উচ্চতায় রয়েছে, তবে বিজয়পতের অবস্থা খুবই খারাপ। একসময় ১২ হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বিজয়পত সিংহানিয়া তাঁর ছেলের হাতে সমস্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করেই সবচেয়ে বড় ভুল করেছিলেন।

রেমন্ডের পথচলা একশো বছর আগে ১৯০০ সালে মুম্বাই থেকে শুরু হয়েছিল। আর ১৯৮০ সালে বিজয়পত সিংহানিয়ার হাতে রেমন্ডের কম্যান্ড দেওয়া হয়। তিনি কোম্পানির দায়িত্ব ভালভাবে পরিচালনা করেন এবং রেমন্ডের নাম ও ব্যবসা আরও ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করে। এরপর ১৯৯০ সালে বিজয়পত সিংহানিয়া ভারতের বাইরে প্রথম শোরুম খোলেন।

২০১৫ সালে বিজয়পত সিংহানিয়া তাঁর পুত্র গৌতম সিংহানিয়ার কাছে রেমন্ডের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। গৌতম কোম্পানির দায়িত্ব নেওয়ার সাথে সাথেই তিনি রঙ দেখাতে শুরু করেন বলে শোনা যায়। বাবা-ছেলের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। একটি ফ্ল্যাট নিয়ে দুজনের মধ্যে এত বিরোধ ছিল যে বিষয়টি আদালত অবধি পৌঁছে যায়। বিজয়পত সিংহানিয়া মুম্বাইয়ের একটি অভিজাত এলাকায় জেকে হাউস নামে একটি বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছিলেন, কিন্তু ছেলে তাকে সেই বাড়ি থেকে বের করে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে বাধ্য করেছিল।

রেমন্ডের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়পত সিংহানিয়া নিজেই স্বীকার করেছেন যে সমস্ত সম্পত্তি, সমস্ত ব্যবসা তাঁর ছেলের হাতে তুলে দেওয়া সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। ১২ হাজার কোটি টাকার এই সংস্থার মালিক এখন দক্ষিণ মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড পারাদি সোসাইটির একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

আরও দেখুন

এ সংক্রান্ত আরও পড়ুন