অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযানরত ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে দায়ের করা মামলার শুনানি শুরুর দিন ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস – আইসিজে। গত ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা এই মামলাটি দায়ের করে। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১১ এবং ১২ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি করা হবে।
মামলার আবেদন করার সময় আবেদনপত্রের সঙ্গে ৮৪ পৃষ্ঠার একটি নথি সংযুক্ত করে বলা হয়েছিল, গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ এর পাশাপাশি গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে।
বলা হয়েছিল, ইসরায়েলের এই আচরণ গণহত্যামূলক। কারণ তারা ফিলিস্তিনি জাতির একটি বড় অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় আইসিজেকে দ্রুত এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই ১১ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিজে। পাশাপাশি শুনানিতে উপস্থিত থাকতে প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য ইসরায়েলকে সমনও পাঠিয়েছে তারা।
এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ইসরায়েলি মিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই মামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলের মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে এবং ইসরায়েল সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেবে।’ গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে স্থলবাহিনীও অভিযানে যোগ দেয়।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, ২২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোক। আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৭ হাজার। হাজার হাজার পরিবার, বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস ও গাজাকে পরিপূর্নভাবে নিরস্ত্রীকরণ করার আগ পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে।