মসজিদ আল্লাহর ঘর। পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম স্থান মসজিদ। মসজিদে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তকে সওয়াবের খাতায় লেখা হয়। বিশ্বের পাঁচটি মসজিদ আছে, যেগুলো পর্যটকদের বিস্ময় করে। প্রতিনিয়ত পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বে এমন কিছু মসজিদ আছে, যার নির্মাণশৈলী, ইতিহাস ও নান্দনিকতার জন্য শুধু মুসলিমদেরই না বরং বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে আকৃষ্ট করে।
বিশ্বের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ আল-আকসা মসজিদ। যাকে বাইতুল মুকাদ্দাস নামেও চিনি। জেরুজালেমের এই মসজিদটির প্রাঙ্গণে কুব্বাতুস সাখরা, কুব্বাতুস সিলসিলা ও কুব্বাতুন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। এই জায়গাটিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ও বলা হয়। এই এলাকাটি বর্তমানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পুরাতন জেরুজালেম শহর ৪ দিক থেকে দেয়ালঘেরা। দেয়ালের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪ কিলোমিটার এবং উচ্চতা হচ্ছে ১২ মিটার। দেয়ালে মোট ৮টা গেট আছে। বিভিন্ন দিক থেকে লোকেরা এ সকল গেট দিয়ে তাতে প্রবেশ করে। প্রসিদ্ধ গেটগুলো হচ্ছে, উত্তরে বাবুল আমুদ, দক্ষিণে বাবুল মাগারিবা, পূর্বে সানস্টিফান ও পশ্চিমে বাবুল খলিল। পূর্বদিকে অবস্থিত বাবুজ্জাহাবি নামক ৮ম গেটটি বন্ধ থাকে। ১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে উসমানি সুলতান সুলাইমান ৫ বছরব্যাপী ঐ দেয়াল নির্মাণ করেন।
বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশ থেকে সেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদি তিন ধর্মের মানুষের প্রাণকেন্দ্র আল আকসা দেখতে যান।
আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবস্থিত শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ। এই মসজিদটি বিশ্বসেরা মসজিদগুলোর একটি। ১৯৯৬ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০০৭ সালে। এটি নির্মাণে অংশ নিয়েছিলেন তিন হাজারের বেশি শ্রমিক। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারাও দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন।
৩০ একর জমির উপর নির্মিত এই মসজিদটি আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এখানে বিভিন্ন সাইজের সাতটি গম্বুজ রয়েছে, যার উচ্চতা ২৭৯ ফিট। রয়েছে ৩৫১ ফিট উচ্চতার চারটি মিনার। ৪১ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে মিলিত হয়ে এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন।
মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অবস্থিত জহির মসজিদ। দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন একটি মসজিদ এটি। এ মসজিদে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে বছরের প্রতিটি দিন। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের কথা মাথায় রেখেই মসজিদটিতে পাঁচটি গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে। এক পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর যত পর্যটক এই মসজিদ দেখতে আসে, তার মধ্যে ১০ শতাংশই হলো অমুসলিম।
মসজিদুল হাসান-আল শানি ক্যাসাবালাঙ্কা হাজ, হাসান মসজিদ নামেই বেশি পরিচিত। মরক্কোর সবচেয়ে বড় শহর ক্যাসাবালাঙ্কায় আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে অবস্থিত এই মসজিদটি। অনেকটা মোঘল স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই মসজিদটির অবস্থান প্রায় ২১ হাজার বর্গমিটার জমির ওপরে। বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনার বিশিষ্ট মসজিদ। এটি একই সাথে বিশ্বের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু।
১৯৯৩ সালে নির্মিত এই মসজিদটির মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার। এর মিনারের চূড়ায় একটি লেজার বিম অবস্থিত, যা থেকে কাবা ঘরের দিক বরাবর সর্বদা একগুচ্ছ আলোক রশ্মি বিচ্ছুরিত হতে থাকে।
তাজুল মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ। মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের শাসনামলে নবাব শাহজাহান বেগম এর নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। আর আল্লামা মুহাম্মাদ ইমরান খান নদভী আজহারি ও মাওলানা সাইয়্যেদ হাসমত আলী ১৯৮৫ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ করেন। তিনটি গম্বুজ ও দুটি সুউচ্চ মিনার, সামনে রয়েছে বিশাল চত্বর। মসজিদের ভেতর ও বাইরে মিলে এক লাখ ৭৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। চত্বরের মাঝখানে রয়েছে বিশাল পানির হাউজ। মসজিদটির আয়তন প্রায় ৪৩ লাখ স্কয়ার ফুট।