যুক্তরাষ্ট্রে ‘ক্যানডিডা অরিস’ নামে নতুন একটি প্রাণঘাতী ছত্রাকের সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। কেবল চলতি মাসেই ওয়াশিংটনে এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছেন অন্তত চারজন। ক্যানডিডা অরিসের সংক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত বিরল হওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ছত্রাকটিতে আক্রান্তদের মৃত্যুর উচ্চ হার, ওষুধ প্রতিরোধের ক্ষমতা এবং স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় সহজেই ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা থাকায় তা নতুন করে বিশ্বজুড়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
গত ১০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে প্রথম একজন ব্যক্তিকে ক্যানডিডা অরিসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। সিয়াটল ও কিং কাউন্টির জনস্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, গত সপ্তাহে তারা আরও তিনজনকে ক্যানডিডা অরিসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছেন।
ফাঙ্গাস বা ছত্রাক হিসেবে পরিচিত ক্যানডিডা অরিস সাধারণত যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের শরীরে সংক্রমণ ঘটায়। বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে ছত্রাকটির। হাসপাতালের রোগী— যারা ফিডিং টিউব, শ্বাস নেওয়ার টিউব বা ক্যাথেটার ব্যবহার করেন, তাদের শরীরে এটা খুব সহজেই ঢুকে পড়ে।
সারা বিশ্বে যারা ক্যানডিডা অরিসে সংক্রমিত হন তাদের প্রায় ৬০ শতাংশই মারা যান। এই ছত্রাক ওষুধ প্রতিরোধী হওয়ায় এর সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও অনেক সময়ই ক্যানডিডা অরিসের সংক্রমণকে অন্য কোনও অসুস্থতা বলে ভুল করা হয়। যার কারণে অনেক সময় আক্রান্ত রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পান না।
২০০৯ সালে জাপানের রাজধানী টোকিওর মেট্রোপলিটন গেরিয়াট্রিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর কানে প্রথম পাওয়া যায় এই ছত্রাক। তারপর থেকে গত কয়েক বছরে বিশ্বের অনেক দেশে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবল ২০২২ সালেই এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছিলেন ২ হাজার ৩৭৭ জন; যা ২০১৬ সালের তুলনায় ৫৩ গুণ বেশি।