ভুলক্রমে গত শুক্রবার গাজা উপত্যকায় তিন জিম্মিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাত থেকে পালাতে সমর্থ হয়েছিলেন এই তিনজন। কিন্তু দখলদার সেনাদের ভুলে করুণ মৃত্যু হয়েছে তাদের। একসঙ্গে তিন জিম্মিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর বিষয়টি তদন্ত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি দল। তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনের বরাতে জিম্মিদের হত্যার বিষয়টি বর্ণনা দিয়েছেন সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন এক সেনা দেখতে পান, তার অবস্থান থেকে কয়েক মিটার দূরের একটি ভবন থেকে তিন ব্যক্তি বের হয়ে আসছেন। তাদের তিনজনের কারো শরীরেই কাপড় ছিল না। তিনজনের একজনের হাতে একটি সাদা পতাকা ছিল।
তাদের তিনজনকে ওই সেনা হামাসের সদস্য মনে করেন। তিনি সন্দেহ করেন, তাদের ফাঁদে ফেলতে হামাসের সদস্যরা এভাবে বাইরে বের হয়ে আসছে। এমন চিন্তা করে কোনো দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ওই তিনজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন তিনি এবং সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী’ বলে চিৎকার করা শুরু করেন।
ওই সেনার গুলিতে তিন জিম্মির দুইজন সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন। অপরজন দৌড়ে আবার সেই ভবনেই ঢুকে পড়েন। ওই মুহূর্তে ওই ব্যাটালিয়নের কমান্ডার বাইরে বের হয়ে আসেন এবং গুলি থামাতে নির্দেশ দেন। তখন হিব্রু ভাষায় ‘সহায়তা’ চাওয়ার শব্দ শুনতে পান উপস্থিত অন্যান্য সেনারা। যে তৃতীয় ব্যক্তি আবার দৌড়ে ভবনে ঢুকে পড়েছিলেন তখন তিনি বের হয়ে আসেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে আরেক সেনা আহত ওই জিম্মিকে গুলি করে হত্যা করেন।
তাকে হত্যা করার পর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার বুঝতে পারেন, এই ব্যক্তি দেখতে ফিলিস্তিনিদের মতো নয়। তখনই তারা নিশ্চিত হন আসলে হামাসের যোদ্ধা ভেবে জিম্মিকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। ভুল বুঝতে পেরে দ্রুত ওই তিনজনের মরদেহ ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়। ইসরায়েলের জ্যেষ্ঠ এই সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশ মিটার দূরের একটি ভবনে ‘এসওএস’ ও ‘সাহায্য করুন, তিনজন জিম্মি রয়েছে’ এমন লেখা দেখতে পেয়েছিলেন সেনারা। তখন তারা ভেবেছিলেন, এটি হয়ত হামাসের একটি ফাঁদ। তবে এখন তদন্ত করা হচ্ছে, নিহত এই তিন জিম্মিই ওই লেখাগুলো লিখেছিলেন কি না।